ঈশ্বরগঞ্জে আগুনের ধোঁয়ায় ছড়াচ্ছে নানা রোগব্যাধি

ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের ঈশ্বরগঞ্জ এলাকার ব্রিজের পাশ ঘেঁষেই ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার বিশাল ময়লার ভাগাড়। অঘোষিত এ ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধে স্থানীয়রা বিপাকে পড়ছে। ভাগাড়ে ময়লার আগুন প্রায়শই জ্বলতে থাকে। এ থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া চারপাশে প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।
স্থানীয়রা জানায়, পৌরসভার এ ময়লার ভাগাড়ে আগুন প্রায়শই জ্বলতে থকে। এতে বিশাল কুণ্ডলী পাকিয়ে ধোঁয়া উড়ে। ধোঁয়ায় চতুর্দিক অন্ধকার হয়ে পড়ে। বিবর্ণ হয়ে পড়েছে এলাকার গাছপালা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ যানবাহনের যাত্রীরা নাক-মুখ চেপে মহাসড়কে চলাচল করে।
জানা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজার থেকে প্রতিদিন যেসব ময়লা সংগ্রহ করা হয় এসব ময়লার বেশিরভাগ ফেলা হয় ব্রিজের পাশে এ এলাকায়। পৌর কর্তৃপক্ষ ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান জোগাড় করতে পারেনি।
স্থানীয়রা মনে করে, এ ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলাই দায়ী। মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলায় পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে। পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি স্থানীয়রা নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে, এটা দায়িত্বশীলরা উপলব্ধি করেননি। ফলে পৌরবাসীর দাবি মহাসড়কের পাশে ময়লা না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় এটি ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। জনবসতিপূর্ণ এলাকার বাইরে ময়লা ফেলার জায়গা নির্ধারণের দাবি পৌরবাসীর সচেতন অংশের।
নির্দিষ্ট ময়লা ফেলার স্থান না থাকায় পৌরসভার সব ময়লা ফেলা হচ্ছে মহাসড়কের পাশে। এ কারণে স্থানীয়রা পৌর প্রশাসনের ওপর ভীষণ ক্ষুব্ধ। ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধ বিশাল এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয়দের বসবাস করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী জুনায়েদ আহমেদ বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ের আগুন ও ধোঁয়ার কারণে এলাকার অনেক মানুষ শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছে। খোলা আকাশের নিচে ময়লার ভাগাড়ে আগুন ও ধোঁয়া ওঠায় পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এলাকার মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। অথচ পৌর প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর নীরব রয়েছে। প্রথম শ্রেণির একটি পৌরসভার ময়লা ও বর্জ্য মহাসড়কের পাশে কোন বুদ্ধিতে ফেলা হচ্ছে? দায়িত্বশীলদের উচিত এটা বন্ধ করা। পৌর প্রশাসন কেন ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করছে না, তা ভেবে আমরা হতবাক।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টির জন্য আমি দুঃখে প্রকাশ করছি। পৌরসভার অধীনে প্রতিদিন প্রচুর কাজ করতে হয়। উপজেলা ভূমি অফিসের কাজের পাশাপাশি পৌরসভার কাজগুলো প্রতিদিন সঠিকভাবে মনিটরিং করে আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি যতটা না আমার অবহেলা তারচেয়ে বেশি আমার সীমাবদ্ধতা। ছয় মাসের মধ্যে পৌরসভার জন্য একটি নির্দিষ্ট ময়লা ফেলার জায়গা বের করতে না পারা অবশ্যই আমার ব্যর্থতা। সেইসঙ্গে, নির্বাচিত প্রতিনিধি আসলে নিশ্চয়ই আপনারা এখানকার চেয়ে ভালো সেবা পাবেন। ততদিন পর্যন্ত একটু ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলের কাছে অনুরোধ কেউ যদি আপনার নিচু জমি পৌরসভার ময়লা দিয়ে ভরাট করতে চান আমাকে জানাবেন। বিনিময়ে আমরা একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা প্রদান করবো। ব্রীজের পাড়ে আমরা প্রথম ব্লিচিং পাউডার দিতাম। ব্লিচিং পাউডার দিয়ে মশা মরছে না এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আগুন লাগানো হচ্ছে। এছাড়া ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতাদিং নিয়মিত আগুন লাগানো হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই আমরা জায়গাটি বালু দিয়ে ভরাট করে দিবো। এমন পরিকল্পনা আছে আমাদের।’
আপনার মতামত লিখুন