ভালুকায় রাতের আঁধারে সরকারী রাস্তার পাশের গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত : শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫, ৫:৪৩ অপরাহ্ণ

ময়মনসিংহের ভালুকায় সরকারী রাস্তার পাশ থেকে রাতের আঁধারে প্রায় ২০ বছর বয়সী আকাশমণি ও মেহগনি প্রজাতির প্রায় ৫০টি বড় গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাঠালী-মল্লিকবাড়ি এলজিইডি সড়কের মল্লিকবাড়ি ৯ নম্বর বাঁধ সংলগ্ন এলাকায়। এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই দশক আগে সরকারী ওই সড়কের দুই পাশে সাত শতাধিক আকাশমণি গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল। রোপণের পর থেকেই এসব গাছের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয় স্থানীয় স্বপন মিয়ার স্ত্রী মোর্শিদা বেগমকে। সম্প্রতি ওই স্থানে একটি কারখানার নির্মাণকাজ চলায় পাশেই ইটের উঁচু প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, সেই নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরাই গাছগুলো কেটে নিচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েকদিনে অন্তত ৫০টি গাছ কেটে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং আরও ১২টি গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর ভালুকা মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে গাছগুলোর মালিকানা কেউ দাবি না করায় তাৎক্ষণিকভাবে জব্দ করা সম্ভব হয়নি। পরে কিছু কাঠ স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তফা কামালের জিম্মায় রাখা হয়।

গাছ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা মোর্শিদা বেগম বলেন, “গাছগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০১১ সালে তাকে লিখিতভাবে দায়িত্ব দেন। তার আরো ৭/৮ বছর আগে গাছগুলো রোপন করা হয়েছিলো। রাতের আঁধারে কোম্পানীর লোকজন গাছগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বাঁধা দিতে গেলে তাকে ভয়ভিতি ও হুমকী দেয়া হয়। তিনি এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান।”

গাছের ক্রেতা সিরাজ উদ্দিন বেপারী জানান, “২৫/২৬ টি গাছ তিনি এক লাখ টাকা দিয়ে কিনেছেন এবং সাদিকুল নামে এক ব্যক্তিকে টাকাগুলো অগ্রিম দিয়েছেন। বেশ কয়েকটি গাছ কেটে আনলেও বাঁধার কারণে অবশিষ্ট গাছগুলো আনতে পারেননি।”

ইউপি সদস্য মোস্তফা কামাল জানান, “সরকারী রাস্তার পাশ থেকে বেশ কিছু গাছ কেটে নেয়া হয়েছে। অবশিষ্ট কিছু গাছ তার জিম্মায় রাখা হলেও বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতের আঁধারে চুরি করে নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে তিনি নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেছেন।”

ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির বলেন, “গাছ কাটার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কেউ মালিকানা দাবি না করায় জব্দ করা সম্ভব হয়নি। তবে এ ব্যাপারে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এক মহিলা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে আাইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, “খবর পেয়ে রাস্তার পাশ থেকে গাছ কেটে নেয়ার বিষয়ে তিনি খবর নিয়েছেন। আপাতত কিছু গাছের টুকরা স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় রাখা হয়েছে। অফিস খোলা হলে ওই বিষয়ে অধিকতর খোঁজ নিয়ে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

 সম্পাদক ও প্রকাশক : আশিকুর রহমান | কপিরাইট © ভোরের পোস্ট, সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন