খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ঢাকা

ভালুকায় ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ছেলের বিরুদ্ধে দোকানপাটে লুটপাট ও ভাঙচুরের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫, ৯:২৬ পূর্বাহ্ণ
ভালুকায় ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ছেলের বিরুদ্ধে দোকানপাটে লুটপাট ও ভাঙচুরের অভিযোগ

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়া গ্রামে ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে ইমরানের বিরুদ্ধে গভীর রাতে দোকানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষক মোঃ আবু হানিফা ভালুকা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১২টা ৩০ মিনিটে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আবু হানিফা জামিরদিয়া মৌজার ৫২ ও ৪৭ নম্বর দাগের ২৭ শতাংশ জমিতে ১৫টি রুম নির্মাণ করে দীর্ঘ ৩০-৩৫ বছর ধরে সেগুলো ভাড়া দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে রয়েছেন। ঘটনার রাতে বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে ইমরান, সাইদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, মফিজ উদ্দিন ও নাজমুল হকের নেতৃত্বে একদল লোক দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে এবং জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করে। অভিযুক্তরা ভাড়াটিয়াদের বুধবার সকাল ৮টার মধ্যে দোকান ছেড়ে না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেন। রাতের এ ঘটনায় খবর পেয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি ওই জমির মালিক। তবে আবু হানিফ ওই জমি ৩৫/৩৫ বছর যাবৎ জোরপূর্বক ভোগ দখলে আছেন। ওই জমি নিয়ে স্থানীয় ভাবে বেশ কয়েকটি সালিশ দরবার হয়েছে। তারা দরবারে বসে বারবার দলিলপত্র সংগ্রহের কথা বলে সময় নেয়। কিন্ত দলিলপত্র নিয়ে পরবর্তীতে সালিশে বসে না।”

ভুক্তভোগী আবু হানিফা জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে ইমরান নামের একজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা রয়েছে। তিনি আরওআর মালিকদের কাছ থেকে জমি কিনে নামজারি করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করছেন। ইমরানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে ভালুকা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভালুকায় বাস দুর্ঘটনায় ভিআইপি পরিবহনের হেল্পার নিহত, আহত ৫

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫, ৭:২৯ অপরাহ্ণ
ভালুকায় বাস দুর্ঘটনায় ভিআইপি পরিবহনের হেল্পার নিহত, আহত ৫

ময়মনসিংহের ভালুকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ভিআইপি পরিবহনের এক হেল্পার নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন যাত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় দুটি বাস পাল্লা দিয়ে চলছিল।

রবিবার (১৫ জুন) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার ভান্ডাব এলাকার এসএনএস সিএনজি পাম্পসংলগ্ন ঢাকাগামী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, দ্রুতগতির ভিআইপি পরিবহনের একটি বাস মহাসড়কে আরেকটি অজ্ঞাত বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছিল। একপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের মাঝখানে থাকা বিভাজকের ওপর উঠে পড়ে এবং সেখান থেকে সড়কে উলটে যায়। এতে বাসটির হেল্পার ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

নিহতের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে তিনি ভিআইপি পরিবহনের হেল্পার হিসেবে বাসটিতে কর্মরত ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আতিকুর রহমান জানান, “সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ভরাডোবা হাইওয়ে থানায় পাঠানো হয়েছে। আহত ৫ জনকে উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।”

দুর্ঘটনার ফলে মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়, এতে করে দুরপাল্লার যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।

ভালুকায় রিকশাচালক বাবাকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছেলে হলো কিশোর চাঁদাবাজ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫, ১১:৩৩ অপরাহ্ণ
ভালুকায় রিকশাচালক বাবাকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছেলে হলো কিশোর চাঁদাবাজ

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়া এলাকায় বাবাকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ করতে গেলে, কিশোর ছেলের হাতে খেলনা পিস্তল ধরিয়ে দিয়ে মিথ্যা চাঁদাবাজ বানিয়ে দুই কিশোরকে সেনা বাহিনীর হাতে তুলে দেন। এ অভিযোগ করে কিশোরের বাবা সাইফুল ইসলাম। ওই ঘটনায় কিশোরদের পক্ষ এলাকায় চরম ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শনিবার (১৪জুন) বিকালে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগের দিন জামিরদিয়া বাদশা টেক্সটাইল মিলের ২ নাম্বার গেইটে রিকশাচালক সাইফুল ইসলাম স্থানীয় আল আমিনের স্ত্রীকে নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে না দেওয়ায় আল আমিন, তার ভাই শামীম ও মেহেদী হাসান রিকশাচালক সাইফুলকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করেন। পরে সাইফুলের ছেলে সিফাত তাঁর বাবাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় শুক্রবার (১৩জুন) তার দুই সহপাঠীকে নিয়ে মেহেদীদের ভ্যারাইটিজ দোকানে যায়। সেখানে তাদের মাঝে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সিফাত দোকানের শোকেজের কাচে লাথি মারে। এ সময় মেহদীরা তিন ভাই ও তাদের কর্মচারীদের নিয়ে তাদেরকে ঝাপটে ধরে ওই দোকান থেকে খেলা পিস্তল কিশোরদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করে। পরে আশেপাশের লোকজন এসে কিছু বুঝে উঠার আগেই কিশোরদেরকে ডাকাত বানিয়ে সেনা বাহিনীর ক্যাম্পে ফোন করে। সেনা ক্যাম্প কাছাকাছি থাকায় সেনাবাহিনী দ্রুত সময়ের মাঝে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুই কিশোরকে ভালুকা মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে মেহেদী হাসান বাদী হয়ে সিফাত ও সাদিকুলের বিরুদ্ধে পিস্তল দেখিয়ে চাঁদা দাবি ও দোকানে ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে সিফাতের বাবা সাইফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি রিকশাচালক, আল আমিনের স্ত্রীকে রিকশায় করে তার গন্তব্য পর্যন্ত না নেওয়ার কারণে আমাকে মারধর করে। ছেলে প্রতিবাদ করতেই তাকে খেলনা পিস্তল দিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে”।

স্থানীয় বাসিন্দা হারুন জানান, সিফাত ও সাদিকুল ভদ্র ও শান্ত ছেলে হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তারা কখনোই এমন ঘটনায় জড়াতে পারে না। তাদের দাবি, ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো। তারা আরও বলেন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন করে কিশোরদের হয়রানি বন্ধ করা হোক।

মেহদী হাসান জানান, তারা আমার দোকানে এসে দোকানের শোকেজের উপর পিস্তল রেখে কাচে লাথি মারে। আমরা চিৎকার শুরু করলে লোকজন এসে তাদেরকে আটক করে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে।

এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে  ওই ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলায় হয়েছে। দুই কিশোরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাদেরকে শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে পাঠায়।

৫০০ টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে খুন, গাজীপুর থেকে ঘাতক স্বামী গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫, ৫:১৪ অপরাহ্ণ
৫০০ টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে খুন, গাজীপুর থেকে ঘাতক স্বামী গ্রেফতার

মাত্র ৫০০ টাকা না পেয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া—এর জেরে ময়মনসিংহের ভালুকায় স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন স্বামী। হত্যাকাণ্ডের তিনদিন পর ঈদের পরদিন খাটের নিচ থেকে উদ্ধার হয় লাশ। ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত স্বামী স্বপন মিয়াকে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভালুকার হবিরবাড়ি এলাকার সীডস্টোর বাজারে স্বামী-স্ত্রী সাবিনা ও স্বপন মিয়া একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। ঘটনার দিন সকালে স্বপন মিয়া গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য স্ত্রী সাবিনার কাছে ৫০০ টাকা চান। টাকা না দেয়ায় তাদের মধ্যে তীব্র ঝগড়া হয়।

এক পর্যায়ে, স্বপন ঘরের ফ্রিজের পাশে থাকা একটি শিল দিয়ে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করেন এবং পরে ধারালো বটি দিয়ে উপর্যুপরি কোপ দেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সাবিনার। এরপর লাশ খাটের নিচে লুকিয়ে রেখে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান স্বপন।

ঈদের পরদিন সাবিনার খোঁজ না পেয়ে স্বজনরা ভাড়া বাসায় গিয়ে তালা দেখতে পান। পরে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে খাটের নিচ থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেন তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

পুলিশ জানায়, খুনের পর স্বপন প্রথমে ঈশ্বরগঞ্জ, পরে মেয়ের বাড়ি ও মামার বাড়ি হয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ভাংনাহাটি এলাকায় এক মেসে গিয়ে আত্মগোপন করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৩ জুন বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ।

গ্রেফতারের পর স্বপন মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তার দেখানো মতে, ঘর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শিল ও বটি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া তার পরিহিত পাঞ্জাবির পকেট থেকে সাবিনার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, “তিনদিন অভিযান চালিয়ে আমরা আসামিকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করেছি। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যার আলামতও উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

নিহত সাবিনা ইয়াসমিন ত্রিশাল উপজেলার তিরখি এলাকার রুহুল আমিনের মেয়ে।