হত্যা মামলায় পুলিশের ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী মো. আরমান (২৪) হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে থানার পুলিশের বিরুদ্ধে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, মামলার মূল আসামিদের না ধরে নিরপরাধ লোকদের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করছে পুলিশ।
২০২৪ সালের ১ অক্টোবর ভোর রাতে বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালনকালে আরমানকে হত্যা করা হয়। নিহত আরমান হোসেন ছিলেন স্থানীয় লোকমান হেকিমের ছেলে। তিনি ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর ওই বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরী হিসেবে যোগ দেন।
ঘটনার পর রাতেই আরমানের মা শামসুন্নাহার ঝরনা বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই মামলার প্রধান আসামি মাসুদকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়।
কিছুদিন পর মাসুদ উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিনের সহায়তায় তিনি জামিনে মুক্তি পান। বাদী দাবি করেছেন, মাসুদ গ্রাম পুলিশ হওয়ায় থানার ওসির সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে মামলাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
২০২৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রাতের বেলায় তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে চারজনকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেন—আরিফ বিল্লাহ বাচ্চু, রিফাতুল ইসলাম শাহীন, বাবুল মিয়া ও রোমান মিয়া।
তাদের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরে কিশোর বাবুলের পিতা মোনায়েম মিয়া ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেলেকে মুক্ত করে আনেন।
রিফাতুল ইসলাম শাহীন বলেন, তাকে রাত ২টার সময় ঘর থেকে তুলে নিয়ে থানায় এনে ঝুলিয়ে মারধর করা হয়। তাকে হত্যামামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়।
কিশোর বাবুল জানান, তাকে বেদড়ক পেটানো হয়। পরে পরিবার টাকা দেওয়ার পর ছাড়া পান। মুক্তির আগে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয় এবং মিথ্যা ভিডিও রেকর্ড করা হয়।
জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, তদন্তের স্বার্থে চারজনকে থানায় আনা হয়েছিল এবং পরে জিডি মূলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। টাকার বিনিময়ে ছাড়া পাওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানান তিনি।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি ওবায়দুর রহমান বলেন, চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জিডি মূলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। টাকার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এদিকে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও পরিবর্তন করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার আক্তার-উল-আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন